যকৃৎ বা লিভারের দোষ এই রোগের অন্যতম প্রধান কারণ। যকৃৎদোষের সহিত কোষ্ঠবদ্ধতার মিলন হইলেই অর্শ রোগ সৃষ্টি হয়। বৃহদন্ত্রের শেষাংশ অর্থাৎ মলনাড়ী(Rectum) হইতে যে সমস্ত শিরা-উপশিরা বাহির হইয়া মলদ্বার ব্যাপ্ত করিয়া রহিয়াছে, মলদ্বারে বায়ু ও রক্ত চলাচলের ব্যাঘাত সৃষ্টি হইলে এই শিরা উপশিরাগুলি স্ফীত হইয়া ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গুটিকার সৃষ্টি করে।
সকালে করণীয়
১. এক লিটার ঈষৎ গরম জলের সহিত আধ ছটাক(৩০মিলি) লেবুর রস এবং এক তোলা(১২গ্রাম) লবণ মিশ্রিত করিয়া পান করিবে।
২. যেকোন আসনে বসিয়া শ্বাস গ্রহণের সহিত মলদ্বার উর্ধ্বে আকর্ষণ করিবে আবার ত্যাগের সঙ্গে সঙ্গে শিথিল করিবে। সকাল ও বিকাল ২০বার।
৩. শ্বাস গ্রহন করিতে করিতে উদরের নিম্নাংশ ও নাভিদেশকে আকুঞ্চিত করিয়া মেরুদণ্ড সংলগ্ন করিবার চেষ্টা করিবে। শ্বাস গ্রহণ সমাপ্ত হইলে শ্বাস ত্যাগ করিতে করিতে আকুঞ্চন শিথিল করিয়া দিবে। সকাল ও বিকাল ১০বার
৪. শ্বাস পরিত্যাগ করিয়া কুম্ভকাবস্থায় যতবার সম্ভব নাভিগ্রন্থি বা সূর্যগ্রন্থিস্থানকে আকুঞ্চিত করিয়া মেরুদণ্ড সংলগ্ন করিবে। যখন শ্বাস বন্ধ রাখা সম্ভব হইবে না তখন আকুঞ্চন শিথিল করিয়া দিয়া প্রাণবায়ু টানিবে। অতঃপর শ্বাস ত্যাগ করিয়া কুম্ভক অবলম্বনে পূর্ববৎ ক্রিয়াটি করিবে। সকাল ও বিকাল ৫বার।
৫. ধুলাবিহীন উন্মুক্ত স্থান খোলা মাঠে মেরুদন্ড সোজা রেখে হাটিবে। হাটার সময় ৪ পদক্ষেপের তালে তালে ১,২,৩,৪ মনে মনে উচ্চারণ করে শ্বাস ত্যাগ করিবে। বায়ু আকর্ষণ সমাপ্ত হইলে আবার চার পদক্ষেপের তালে তালে ১,২,৩,৪ মনে মনে উচ্চারণ করে শ্বাস গ্রহণ করিবে।(ভ্রমণ প্রাণায়াম)
সন্ধ্যায় করণীয়
১. ভ্রমণ প্রাণায়াম
২. সকালে উল্লেখিত ২,৩ ও ৪নং
৩. পদ্মাসনে বসে দুই হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি কোমরের পার্শ্বে এবং মধ্যমাঙ্গুলি নাভির উপর রেখে নাভিদেশকে সঙ্কুচিত করিয়া মেরুদণ্ডের সহিত সংলগ্ন করিবে। নাভিদেশ মেরুদণ্ড সংলগ্ন হওয়ার সাথে সাথেই আঙ্গুলের চাপ শিথিল করিবে।
৪. শবাসনে শুয়ে ডান পা হাঁটুর কাছে ভাঁজ করে উভয় হাত দ্বারা ঐ হাঁটু ডান বুকে সজোরে চাপিয়া ধরে ৫/১০ সেকেন্ড পর ছেরে প্রসারিত করিবেন। অতঃপর বাম পা অনুরূপভাবে চাপিয়া ধরে ৫/১০ সেকেন্ড পরে প্রসারিত করিবেন। এরপর উভয় হাঁটু এভাবে বুকে ৫/১০ মিনিট চাপিয়া ধরিবেন। আবার প্রসারিত করিবেন।
খাবারে বিধি নিষেধ
ভোরেঃ আনারস, আঙ্গুর, বেল-পানা, পেঁপে, কিস্মিস্ প্রভৃতি খাওয়ার অন্ততঃ আধাঘন্টা আগে ভিজিয়ে রাখার পরে খাবে। বেদানার রস, লেবুর শরবত প্রভৃতি ব্যতীত সকালের খাবার নিষেধ।
দুপুরেঃ পেঁপে, ওল, ডুমুর, কচু, পুঁইশাক, পালং শাক প্রভৃতি টাটক শাক, কচি চালকুমড়া, পটল প্রভৃতি তরকারি। একপোয়া, দেড়পোয়া পাতলা দুধ বা ঘোল ভাত বা রুটির সাথে খাবে।
নিষেধঃ ঘি, মাখন, থোড়, মোচা, কাঁচকলা, ইচড়ের তরকারি, ঘন দুধ ও ক্ষীর, মাংস, ডিম প্রভৃতি।
প্রয়োজনে পরামর্শ নিতে পারেনঃ যোগী পিকেবি প্রকাশ, পরিচালক- আনন্দম্ ইনস্টিটিউট অব যোগ এন্ড যৌগিক হসপিটাল। ফোনঃ ০১৭১১১৩৯৪০১, মেইলঃ yogabangla@gmail.com