logo

ডায়াবেটিস রোগ কি, বিনা ঔষধে মুক্তির উপায়

অগ্নিগ্রন্থির দুর্বলতার কারণে বহুমূত্র রোগের উৎপত্তি। সূর্যগ্রন্থি(Pancreas) এবং যকৃৎ(Liver)ই অগ্নিগ্রন্থির প্রধান গ্রন্থি। এই গ্রন্থিদ্বয়ের ক্রিয়া বিপর্যয়ের ফলে বহুমূত্র রোগ সৃষ্টি হয়। সূর্যগ্রন্থির অন্তর্নিঃসৃত রসের একাংশ প্রবাহিকা নাড়ী অর্থাৎ উর্ধ্ব অন্ত্রে সঞ্চিত খাদ্যবস্তুকে জীর্ণ করে, তার অন্তর্নিঃসৃত রসের আর এক অংশ খাদ্যবস্তু থেকে গ্লুকোজ বা চিনি তৈরি করে তা সূর্যগ্রন্থিকোষে সঞ্চিত রাখার ব্যবস্থা করে। এই সঞ্চিত চিনিই প্রয়োজনমত দগ্ধ হয়ে দেহের তাপ, দেহস্থ পেশী, তন্তু ও স্নায়ুর জীবনীশক্তি অটুট রাখে।

এই সূর্যগ্রন্থি ও যকৃতের ক্রিয়া দূর্বল হয়ে পড়লে যকৃৎ তখন আর প্রয়োজনানুরূপে বণ্টনের জন্য চিনি স্বীয় কোষে সঞ্চিত করে রাখতে পারে না। এই চিনি রক্তে যথেচ্ছভাবে প্রবেশ করে রক্তের ক্ষারভাগ(Alkalinity) নষ্ট করে দেয়, ফলে রক্ত তখন সমস্ত দেহযন্ত্রকে বিশুদ্ধ পুষ্টিকর খাদ্য পরিবেশন করতে পারে না; রক্তের ক্ষারধর্ম নষ্ট হলে রক্তের রোগবিষ প্রতিরোধ করার ক্ষমতাও দ্রুত হ্রাস পায়। শরীর তখন রক্তমিশ্রিত এই অপ্রয়োজনীয় এবং অনিষ্টকারী চিনিকে তরল করে মূত্রগ্রন্থির(Kidney) সাহায্যে ছেকে মূত্রের সাথে শরীর থেকে বের করে দেওয়ার ব্যবস্থা করে। রক্তের চিনিকে তরল রাখার জন্য দেহে প্রচুর জলের প্রয়োজন হয় –এইজন্যই বহুমূত্ররোগীর পুনঃ পুনঃ জল পিপাসার উদ্রেক হয় এবং জলই আবার প্রস্রাবরূপে শরীর থেকে অনিষ্টকারী চিনি বার করে দেয়।

চিকিৎসাঃ

ভোরেঃ সহজ বস্তিক্রিয়া অতঃপর প্রাতঃকৃত্যাদি ও অর্ধস্নান; সহজ অগ্নিসার ৩০ বার, অগ্নিসার ধৌতি ১নং ২০বার, ২নং ৬বার; সহজ প্রাণায়াম ১,২,৩,৮; বারিসার ধৌতি বা বমন ধৌতি।

মধ্যাহ্নেঃ স্নানের সময় সহজ অগ্নিসার ২৫বার, অগ্নিসার ধৌতি নং ১ ও ২

সন্ধ্যায়ঃ ভ্রমণ প্রাণায়াম, যোগমূদ্রা, পশ্চিমোত্তান, সহজ অগ্নিসার। সহজ প্রাণায়াম ১,২,৩,৪; বিপরীতকরণী, পবনমুক্তাসন।

আহারান্তে দক্ষিণ নাসায় এক ঘন্টা শ্বাস প্রবাহ অব্যাহত রাখিবে।

খাবার বিধি নিষেধঃ

সকালেঃ  উচ্ছের রস, জামের বিচির শাঁস মধুসহ, তেলাকুচি পাতার রস দুই চামচের বেশি ১২মিলি সকালে খালি পেটে খেলে খুব উপকার।

দুপুরেঃ প্রধান খাদ্য তবে পরিমানে অল্প, আহারের ১/৩ অংশ ভাত/রুটি, ২/৩ অংশ ডাল, সবজী, বাদাম, সয়াবিন, নারকেল, দুধ-দই ও যে কোন প্রকার ফল। প্রধান আহারের এক ঘন্টা আগে ও একঘন্টা পরে পানি পান বিধেয়। খাওয়ার সময় জল পান অবশ্য বর্জনীয়।

নিষিদ্ধ পথ্য- মাছ, মাংস, ডিম, ঘি, মাখন, তেলেভাজা-ঘিয়েভাজা খাদ্যসমূহ, মুড়ি, চিড়া, মিষ্টি-মিঠাই, চিনি(গুড় ও মধু খাওয়া যাইতে পারে), গুড়া দুধ, হরলিকস ও টিনমিল্ক, চকোলেট, বিস্কুট, লজেন্স, চানাচুর, আইসক্রীম, চা, কফি, বিড়ি, সিগারেট, খয়ের, জরদা, নস্য ও যে কোন প্রকার মাদক দ্রব্য।

বিকেলেঃ টক মিষ্টি রসালো ফল ও রাতেঃ দুধ ও কলা

একাদশী থেকে অমাবস্যা/পূর্ণিমা এর মধ্যে একদিন না খেয়ে থাকা বাঞ্ছনীয়। এ সময় প্রচুর পানি পান করিবে অন্য কোন খাদ্য গ্রহণ করিবে না। সম্পূর্ণ উপবাসে অক্ষম হইলে সুপক্ক অম্ল ফল যেমনঃ কমলা, আনারস, আঙ্গুর, ডালিম প্রভৃতি খেতে পারবে। ভাত রুটির পরিবর্তে কাচাকলা সিদ্ধ, ওল সিদ্ধ, মান কচু সিদ্ধ খাইবে।  সুপক্ষ কলা, বেগুন, থোর, মোচা, ডুমুর, টাটকা শাক পাতা, টক ও মিষ্ট ফল, দধি ও নারিকেল খেতে পারবে।

শীতকালে ২ লিটার ও গ্রীস্মকালে ৩ লিটার পরিমানে পানি পান করিবে। মাঝে মাঝে পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে পান করিবে। দিনে ৩/৪ বার এক গ্লাস পানিতে বা দুধে ছোট চামচের এক চামচ মধু মিশিয়ে পান করিবে।

যোগাযোগঃ যোগী পিকেবি প্রকাশ, পরিচালক, আনন্দম্‌ ইনস্টিটিউট অব যোগ এণ্ড যৌগিক হস্‌পিটাল। মেইলঃ yogabangla@gmail.com