বাঙালি জাতির হাজার বছরের শৌর্যবীর্য ও বীরত্বের এক অবিস্মরণীয় গৌরবময় দিন বাংলাদেশের সুবর্ণ জয়ন্তী আজ। ১৯৭১ সালের এই দিনে পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন ভূখণ্ডের নাম হয়েছিল। এই দিনের স্মৃতিকে স্মরণ করতে ষাটোর্ধ ব্যক্তিদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা ও খাবার বিতরণ করে আনন্দলোক ফাউণ্ডেশনের দ্যা নিউজ ডটকম।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৪ ঘটিকায় বরিশাল আগৈলঝাড়া পশ্চিম গোয়াইল গ্রামে আনন্দলোকের দক্ষিণ বঙ্গ শাখার নিজস্ব ভবনে পালিত হয় বাংলাদেশের সুবর্ণ জয়ন্তী ও আনন্দলোক ফাউন্ডেশন এর নির্বাহী পরিচালক ও দ্যা নিউজের বার্তা সম্পাদক রাই কিশোরী চৌধুরীর জন্মদিন উদ্যাপন।
আজ সারা দেশে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন করা হচ্ছে। স্থানীয় ষাটোর্ধ ব্যক্তিদের নিমন্ত্রণ করে তাদের শারীরিক পরীক্ষা করে খাবার বিতরণ করা হয়। বয়স্কব্যক্তিরা আবেগ আপ্লূত হয়ে অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
বীরমুক্তিযোদ্ধা মুকুন্দ লাল মুন্সী বলেন, মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। কিন্তু এত বছরে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সেবা ও খাদ্য বিতরণ করে বিজয় দিবস কিংবা জন্মদিন উদ্যাপন কখনো দেখিনি। আমি আশীর্বাদ করি এরা যেন সারা জীবন এমন ভালো কাজ করতে পারে।
সেবা পাওয়া বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা আনন্দে জড়িয়ে ধরে কেঁদে বলেন, তোমাদের জন্য আমরা এমন দিন পেলাম, আশীর্বাদ করি যেন বার বার এমন আনন্দ করতে পারি। সত্যি এটা “আনন্দলোক”। আনন্দলোকে আনন্দে জীবন ট্যাগ লাইন সত্যি স্বার্থক। এমন মানুষ আমরা দেখিনি যারা নিঃস্বার্থভাবে মানুষের সেবা করে।
আনন্দলোক ফাউন্ডেশন ও দ্যা নিউজের বার্তা সম্পাদক রাই কিশোরী বলেন, ২০২১ সালের আমার জন্মদিন উৎসর্গ করেছি সেই সব বৃদ্ধ মাবাবাদের যারা তাদের সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেছেন তাদের ছেলেমেয়েদের মানুষ করতে, প্রতিষ্ঠিত করতে। আমাকে যদি কিছু দিতে চান তবে ধান, দূর্বা দিয়ে মন থেকে আশীর্বাদ করবেন যেন আজীবন এভাবে মানুষের সেবা করে যেতে পারি। যদিও আনন্দলোকের নিচতলা বৃদ্ধ ও অনাথ আশ্রম। তবুও আমরা কামনা করি যেন বৃদ্ধাশ্রম তৈরি না হয়। সব মা বাবা তার বাড়িতে যত্নে শেষ বয়স কাটাতে পারেন। মা বাবা বুড়ো বয়সে বেশিকিছু চায় না। তারা থাকা, খাওয়া আর একটু শান্তি চান। ছেলে মেয়ের হাঁসি মুখটা দেখতে চান, চান একটু ভালো ব্যবহার। যে মা বাবা আমাদের বড় করতে, প্রতিষ্ঠা করতে তার পুরো জীবন দিয়েছেন, আমরা কি পারিনা তাদের শেষ বয়সে একটু খুশি তাদের উপহার দিতে?
ধান, দূর্বা দিয়ে আশীর্বাদ করছেন সকলে। আনন্দলোক এমন একটা জায়গা যেখানে কোন অনুষ্ঠান হলে কাওকে নিমন্ত্রণ করতে হয়না। এখানে কোন অনুষ্ঠান হচ্ছে শুনলে বেশিরভাগ সবাই নিজে থেকেি চলে আসেন।
আনন্দলোকের চেয়ারম্যান প্রমিথিয়াস চৌধুরী বলেন, এটাই আমাদের সার্থকতা যে সবাই এখানে কিছু হচ্ছে শুনলে আনন্দিত মনে নিজেরা চলে আসেন। এখানে নিমন্ত্রিতদের বাইরেও অনেক বেশি রান্না করা হয়। আর অন্নপূর্ণার ভাণ্ডার থেকে কেউ খালি মুখে কখনো ফেরত যায় না। আমি একটা বিষয় খেয়াল করেছি, আজ পর্যন্ত কখনো দেখিনি এখানে খাবার কম পড়তে বা কখনো নস্ট হতে।