মানব অস্তিত্ব ৩ স্তরে বিন্যস্ত- শারীরিক, মানসিক ও আত্মিক। শারীরিক স্তরে মানুষ সুখ ভোগ করে, মানসিক স্তরে শান্তি আর আত্মিক স্তরে আনন্দ লাভ করে।
সুখঃ প্রতিটি জীবই সুখ চায়, প্রতিটি মানুষ সুখ চায়। কোন কিছুর অভাবই দুঃখ আর অভাবের পূর্ত্তিই হ’ল সুখ। মন যখন সংস্কার অনুযায়ী কাঙ্খিত বস্তু ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে ভোগ করে তখন তার স্নায়বিক অনুভূতিই তার কাছে সুখ। আর যখন সংস্কার অনুযায়ী অনাকাঙ্খিত বস্তু ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে ভোগ করে তখন তার স্নায়বিক অনুভূতিই তার কাছে দুঃখ।
শান্তিঃ শান্তি হল মানসিক সাম্যাবস্থা। মনের সাম্যাবস্থা অর্থাৎ যখন প্রবৃত্তির তাড়নায় সুক্ষ্ম মন কারন মনকে প্রভাবিত করে না। আবার কামনা-বাসনার তাড়নায় ইচ্ছাশক্তির দ্বারা চেতন মনকে জাগতিক ভোগের দিকে ছুটিয়ে নিয়ে যায় না, তাকে বলে শান্তি। কামনা-বাসনার তাড়নায় ইচ্ছা শক্তি যদি চেতন মনকে জাগতিক ভোগের দিকে অর্থাৎ টাকা-পয়সা, বাড়ী-গাড়ী ইত্যাদির দিকে ছোটাতে থাকে মন কখনও শান্তি পাবে না। জাগতিক ভোগে ক্ষণিকের সুখ পেতে পারে মাত্র। কারণ মনের ক্ষুধা অনন্ত।
আনন্দঃ জাগতিক বস্তুতে দেহের ক্ষুধা মেটে। দেহের প্রয়োজন সীমিত আর জাগতিক বস্তুও সীমিত তাই জাগতিক বস্তুপ্রাপ্তিতে সুখও সীমিত। জাগতিক বস্তুতে দেহের ক্ষুধা মিটলেও মনের ক্ষুধা মেটেনা। মনের ক্ষুধা অনন্ত। তাই সীমিত সুখে মানুষের মন ভরে না। সে চায় অনন্ত সুখ। অনন্ত সুখই আনন্দ, আর আনন্দই ব্রহ্ম। মন যখন আত্মাভিমুখী হয়ে বিস্তার লাভ করে, আত্মিক অনুভূতি লাভ করে সে পায় আনন্দ।
সুখানুরক্তি পরমা জৈবী বৃত্তি। প্রতিটি জীবই সুখ চায়, প্রতিটি মানুষ সুখ চায়। কোন কিছুর অভাবই দুঃখ আর অভাবের পূর্ত্তিই হ’ল সুখ। জাগতিক বস্তুতে দেহের ক্ষুধা মেটে। দেহের প্রয়োজন সীমিত আর জাগতিক বস্তুও সীমিত তাই জাগতিক বস্তুপ্রাপ্তিতে সুখও সীমিত। জাগতিক বস্তুতে দেহের ক্ষুধা মিটলেও মনের ক্ষুধা মেটেনা। মনের ক্ষুধা অনন্ত। তাই সীমিত সুখে মানুষের মন ভরে না। সে চায় অনন্ত সুখ। অনন্ত সুখই আনন্দ, আর আনন্দই ব্রহ্ম। প্রতিটি মানুষ জ্ঞাতসারে হোক বা অজ্ঞাতসারেই হোক সেই আনন্দঘনসত্তা ব্রহ্মকে পেতে চায়। তাই মানব জীবনের লক্ষ্য হ’ল আনন্দঘন সত্তা ব্রহ্ম। অষ্টাঙ্গিক রাজাধিরাজ যোগসাধনা হ’ল সেই আনন্দঘন সত্তাকে লাভ করার জন্য নিয়মিত শারীরিক-মানসিক-আধ্যাত্মিক প্রয়াস।