logo

হাঁচি-কাশি-মুখের থুথুর ড্রপলেট এর মাধ্যমেই ছড়ায় করোনা

করোনা গ্রুপের কোভিড-১৯ ভাইরাস রোধে নানা সতর্কতামূলক প্রচার চলছে। এই করোনা ভাইরাস ছড়ানোর অন্যতম মাধ্যম রোগাক্রান্ত মানুষের হাঁচি-কাশি-মুখের থুথুর ড্রপলেট বায়ুতে ঘুরে বেড়ায়।

ন্যাশভিল-এর ভ্যান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল সেন্টারের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ উইলিয়াম শ্যাফনারের মতে, রোগাক্রান্ত মানুষের হাঁচি-কাশির ড্রপলেট বায়ুতে ঘুরে বেড়ায়। রোগীর কাছাকাছি থাকা সুস্থ মানুষের নাক, মুখ ও চোখের মাধ্যমে তার শরীরে প্রবেশ করে এই ড্রপলেট। শরীরে এসেই ভাইরাসের অণুগুলো দ্রুত নাসাপথের পিছন দিকে বা গলার ভিতরের দিকে মিউকাস মেমব্রেনের ভিতরে গিয়ে সেখানকার কোষে হানা দেয়।

পবিত্র রমজানে রোজাদার ব্যক্তিরা নিজের অজান্তে মুখের থুথু যেখানে সেখানে ফেলছে। এদের মধ্যে যদি কাহারো করোনাভাইরাসের ড্রপলেট থাকে তবে আরকি তার থুথুর মাধ্যমে পুরো এলাকা প্রাণঘাতী ভাইরাস ছড়িয়ে দেবে আর সুস্থ ব্যক্তির কাছে যাওয়ার মাধ্যমে তার নাক, মুখ ও চোখের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে আক্রান্তের সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আরও জানতে পড়ুনঃ  করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ ও নিরাময়ের সহজ উপায়

যদিও ইসলাম ধর্মীয় চিন্তাবিদ জানিয়েছে, নিজ মুখের থুথু, কফ  ইত্যাদি গলাধঃকরণ করায় রোজার কোন ক্ষতি হয় না। তবে রাস্তায় যেখানে সেখানে কেন ফেলবে মুখের থুথু?

অনিচ্ছাকৃত বমি হলে (এমনকি মুখ ভরে হলেও) রোজা ভাঙ্গবে না। তেমনি বমি মুখে এসে নিজে নিজেই ভেতরে চলে গেলেও রোজা ভাঙ্গবে না। বলা হয়েছে, অনিচ্ছাকৃতভাবে কোনো ব্যক্তির বমি হলে তার রোজা কাজা করতে হবে না। -জামে তিরমিজি: ১/১৫৩, হাদিস : ৭২০

আমাদের আরেকটি খুবই বদ অভ্যাস হলো মুখের থুথু দিয়ে টাকা গোনা, বাজারের দোকানদার পলিথিন কিংবা কোন ব্যাগ খুলতেই মুখের থুথু হাতে লাগিয়ে কিংব মুখের ফুঁ দিয়ে খুলছে। এর ফলে ঐ ব্যক্তির শরীরে ভাইরাস থাকলে টাকা কিংবা ব্যাগের মাধ্যমে গ্রাহকের হাতে চলে গেলো। ঐ হাত তার নাকে মুখে কিংবা চোখে দিলেই ভিতরে চলে যাবে করোনাভাইরাস।

ভাইরাস সংক্রমণের আরেকটি অন্যতম মাধ্যম ছিলো হ্যাণ্ডশেক। এটা করোনাভাইরাসের সংক্রমণের শুরু হওয়ার সাথে সাথেই অনেকটা কমে গেছে।

আনন্দম্‌ ইনস্টিটিউট অভ যোগ এণ্ড যৌগিক হস্‌পিটাল এর পরিচালক যোগী পিকেবি প্রকাশ (প্রমিথিয়াস চৌধুরী) বলেন, আমাদের দেহে রোগ প্রবেশের প্রধান দু’টি দরজা হলো নাক ও মুখ। আমরা মুখ ব্যবহার করি শুধু খাওয়া ও কথা বলার সময় তাই এই পথে রোগ জীবাণু প্রবেশের সুযোগ একটু কম। নাক হচ্ছে অবধারিত দ্বার, বেঁচে থাকতে হলে ইচ্ছে করেও নাক বন্ধ রাখতে পারিনা। এজন্য শতকরা প্রায় ৯০ ভাগ রোগই নাক দিয়ে দেহের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে;বিশেষ করে ভাইরাস ঘটিত।

যোগী পিকেবি প্রকাশ আরও বলেন,  আমরা সচেতন হই মুখের থুথু যেখানে সেখানে না ফেলি, টাকা কিংবা কিছু খুলতে মুখের থুথু ব্যবহার না করি, কোন প্যাকেট/পলিথিন খুলতে মুখের ফুঁ না দেই। কোন কিছু ধরে হাত সাবান দিয়ে না ধুয়ে নাকে মুখে চোখে হাত না দেই।  এই বিষয়গুলো থেকে নিজে সচেতন হই এবং অন্যকে পরিবর্তনের চেষ্টা করি তবেই পরিবেশ হবে জীবাণুমুক্ত।

ঔষধ ছাড়া সুস্থ্য থাকার পরামর্শের জন্য যোগাযোগ করতে পারেনঃ যোগী পিকেবি প্রকাশ(প্রমিথিয়াস চৌধুরী), মেইলঃ yogabangla@gmail.com। ফেইসবুক: https://www.facebook.com/promithias